শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৫৯ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালে প্রায় দিনেই জেলেদের হামলার শিকার হয়ে থাকে যাত্রীবাহী লঞ্চ। শীত আসলেই নদীর পানি কমে যায় যার ফলে বরিশাল একতলা লঞ্চঘাট থেকে প্রায় বিলুপ্তির পথে গিয়ে দাড়িয়ে একতলা লঞ্চ। বরিশাল-মজুচৌধুরীর হাট বেশ কয়েক লঞ্চ চলাচল করলেও জেলেদের হামলার শিকার হয় যাত্রীবাহী লঞ্চ। লঞ্চস্টাফদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, নদীতে পানি কম থাকার কারনে জেলেদের সিগন্যাল মানা কষ্টকর হয় পরে। কারন হিসাবে দেখিয়েছে যদি জেলেদের সিগন্যাল মানতে হলে লঞ্চ চরে উঠে যাবে। এমন এক ঘটনার জম্মহল মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাট থানার ভাষানচর ইউনিয়নের খন্ডবাঘড়ঝা এলাকার শাহ আলমের বাড়ির সামনে। গত ৮ নভেম্বর সকাল ৮টার দিকে জেলেদের অতর্কিত হামলার শিকার হয় এমভি গ্রীন ওয়াটার-৫ নামের একটি একতলা লঞ্চ। লঞ্চের যাত্রীরা জানান গত বৃহস্পতিবার সকালে বাঘড়ঝা এলাকায় পৌছালে লঞ্চটিকে সিগন্যাল দেয় জেলেরা। এসময় লঞ্চ চালক কোন দিক না করতে পেয়ে লঞ্চটি থামিয়ে দেন চালাক। লঞ্চটি থামানোর পরে লঞ্চের চালক নয়ন ও শাওনকে মারধর শুরু করে। লঞ্চের চালক দিকদিশা না পেয়ে লঞ্চটি চরে উঠিয়ে দেয়। এর পরে আরো অনেক জেলেরা এসে লঞ্চটিকে ভাংচুর করা শুরু করলে সেখানে বাধা প্রদান করে মেহেন্দীগঞ্জ থানার(ইউনিফরম পরিহিত) এসআই সাইফুল ইসলাম ও মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। তাদের পরিচয় পাওয়ার পরেও এলোপাথারী ভাবে পিটিয়ে আহত করে। সূত্র জানা গেছে ওই এলাকার মতি গোয়ালের পুত্র দেলোয়ার হাওলাদারের নেতৃত্বে থাকা জলদস্যু বাহিনী এসে লঞ্চে থাকা নগদ টাকাসহ মালামাল এবং যাত্রীদের মালামাল লুটে নেয় বলে জানা যায়। এ ঘটনায় আহত ভোলার মনপুর এলাকার কাজল বেগম জানান, আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলার শিকার হয়েছি। আমার সাথে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় জলদস্যু বাহিনীর সদস্যরা। আমার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার সময় আমি বাধা প্রদান করলে আমার মাথায় আঘাত করে ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। এভাবে আরো বেশ কয়েকজন যাত্রীর মালামাল ছিনিয়ে নেয় এরা। আহত মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আসলে দোষটি জেলেদের। তারা এমন ভাবে জাল পেতে রেখেছে লঞ্চটি যাওয়ার কোন জায়গা ছিলো না। তার লঞ্চের চালক লঞ্চটি থামিয়ে রাখলেও ইসমাইল নামের এক জেলে দেলোয়ারকে ফোন করে লোকজন নিয়ে আসো আমাদের ক্ষতি করে লঞ্চ থামিয়ে দিয়েছে। তখন দেলোয়ার তার২০/২৫ জন জলদস্যু বাহিনী নিয়ে এসে হামলা শুরু করে। আমরা বাধা দিতে গিয়েই আমার মাথা ও এক পা ভেঙ্গে গিয়েছে। ঘটনার বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মেহেন্দীগঞ্জ থানার এসআই সাইফুল ইসলাম’র সাথে তিনি জানান, আসলে কোন কিছু বুঝ ওঠার আগেই জলদস্যু দেলোয়ার হামলা শুরু করে। আমি পুলিশের একজন সদস্য হয়েও জলসদ্যুদের হাত থেকে রক্ষা পায় নি আমার মাথায় প্রচন্ড আঘাত লেগেছে। তিনি আরো বলেন আমি প্রাথমিক ভাবে ৯/১০জনের নাম পেয়েছি এরা হলো শাহ আলম খান, কালাম গাজী, ইব্রাহীম, সাদ্দাম হোসেন, ইসমাইল হোসেন, হেল্লাল, জাফর গাজী, রুহুল আমিন। তিনি বলেন আমি সরকারী কাজে বরিশাল যাচ্ছিলাম। তবে তিনি এঘটনায় মামলা দায়ের করবেন বলেও আশ্বস্ত করেন গণমাধ্যমকর্মীকে। বিষয়টি নিয়ে কথা লঞ্চ মালিক আফসার উদ্দিন ঘরামির সাথে তিনি বলেন, লঞ্চের যা ক্ষতি হয়েছে তা পুশানো কষ্ট হয়ে যাবে কিন্তু আমার লঞ্চের ২ দিনের টিকিট বিক্রির ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ বিষয় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি। বিষয় মেহেন্দীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জানান আমরা ঘটনাটি শুনেছি। আমার এক সদস্যও আহত হয়েছে। তবে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাই নাই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply